মধ্যবিত্তের বৃত্তে আবদ্ধ জীবন___অচল পয়সা

১.
মধ্যবিত্ত পরিচয় কিংবা শব্দটা জন্মের পরই নামের সাথে আপনাআপনি জুড়ে যায়,এটা মনুষ্য সৃষ্ট উপাধি না শব্দ তা এখনো বুঝতে পারছিনা,
হয়তবা এটা প্রকৃত সৃষ্ট একটা পরিচিত শব্দ যা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের প্রকার,অবস্থানভেদে যুক্ত হয়।
মধ্যবিত্তের উপরশ্রেণীর শব্দও আছে,যেমন উচ্চবিত্ত,নিম্নবিত্ত,বিস্তারিত শব্দ বিশ্লেষণে নাই গেলাম,কারন অতটা জ্ঞান আমি রাখিনা,উচ্চবিত্ত শব্দটা কেন জানি খুব ভারী মনে হয়,
জন্মত আর কারো মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্ত,নিম্নবিত্ত মায়ের পেটে হয়না,
ওই জায়গাটা সমানে একি,জন্মের পরই এসব যুক্ত করে সমাজপতি কিংবা জ্ঞানপতিরা,
২.
যাই হোক আমি আমার মধ্যবিত্তের কাহিনীটা কিছু শেয়ার করছি,
মাধ্যমিকে পড়ার সময় একটু একটু এই শব্দগুলোর সাথে পরিচিত হলেও বুঝতামনা বাস্তবতা,হেসে খেলেই মাধ্যমিকের গন্ডি পেরুলাম,
উচ্চমাধ্যমিকের শুরুতেই হোচট খেলাম।
৩.
কলেজে যাওয়া শুরু হতেই ভর করল মন খারাপ,হীনমন্যতা,
যেমন প্রতিদিন একি শার্ট,টি-শার্ট, জামা পরিধান করা,বন্ধুদের রঙ্গচঙ্গা পোশাক দেখে নিজেকে আড়াল করতাম,শুরু হল একলা থাকার চেষ্টা,বাসায় বলতাম মাকেই,বাবাকে বলা হতনা কিছুই,কেন এখনো জানিনা,সমাধান কিছুটা হত,
বাবা ছিলেন চাষার ছেলে শুদ্ধ-সহজ বাংলায় কৃষক,জায়গা-জমি ভালয় ছিল তাই অন্তত অভাব ছিলনা,খেতে পারতাম,পরতে পারতাম,বিলাসিতা একটু রঙ্গীন এটুকুই অভাব ছিল।
কলেজ জীবনে সবচেয়ে দুর্বলতা ছিল #মোবাইল_ফোনের প্রতি,বন্ধুদের ভাই-বাবা থাকত বিদেশ কিংবা বেশ অবস্থাসম্পন্ন তাই হয়ত দামী ফোন তাদের জন্য রীতিমত হাতের খেলনা,
কিন্তু আমার কাছে ছিল আকাশচুম্বী এক বস্তুর নাম,
শুরু হল মিথ্যা বলা,টুকটাক বাসা থেকে জিনিস বিক্রি,চরিত্রেরও যথেষ্ট অবণতি হতে লাগল সাথে স্বাস্থ্যের ও।
বাবার সাথে সম্পর্কে চীট ধরল,মা মুখ বুঁজে বাবার দেওয়া বখা হজম করতেন(এখনো করেন মাঝেমাঝে),
যাই হোক ফোনের আশা #সেকেন্ডহ্যান্ডেই সীমাবদ্ধ থাকল।
৪.
প্রেমে পড়লাম,সেই ও ডুবল,ডুবাল,
শেষমেষ আমায় ভাসিয়ে দিল,
#ভেসেও_গেলাম,
পড়ালেখার পাঠ এখানে চুকিয়ে পেললাম।
নতুন উপাধি জুটল #বেকার।
চাকরির চেষ্টা করতে লাগলাম,প্রথমবস্থায় ব্যার্থ হলাম,(প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার জোড় নেই,চাকরি কিভাবে হবে)
পরে অবশ্য পেয়ে গেলাম,বছরখানেক করলাম,মধ্যখানে পুরনো প্রেমের নতুন ঢেউয়ে আবার ভেসে গেলাম,
চাকরি গেল,অসুস্থ হলাম।
খেই হারিয়ে পেললাম #চাকরি_প্রেম দুটোই হারিয়ে।
বাসায় বদ্ধ ঘরে আবদ্ধ রইলাম বছর তিনেক।
আবার চাকরি হল এখনঅবধি চলছে,
কিন্তু মধ্যবিত্তের বৃত্ত থেকে আজঅবধি বের হতে পারলামনা,(আশায় আছি)
৫.
কখনো খাওয়া হয়নি ৮০টাকা দামের #কপিটা,যাওয়া হয়নি আলো আঁধারির খেলায় রঙ্গীন রেষ্টুরেন্টগুলোতে,যেখানে উচ্চবিত্তরা বিল পেমেন্ট করে #ভিসা_কার্ড দিয়ে,(#প্লাস্টিকের_এই_কার্ডটি #এখন #অবশ্য_আমারও_একটা_আছে,
কিন্তু টাকার এমাউন্টটা বলার মত নয়),চট্টগ্রাম শহরের বাইরের শহরগুলোতে এখনো পা মাড়ায়নি শুধুমাত্র মনে হয় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর গ্রাহক হওয়ায়,
একদিক দিয়ে অবশ্য আমি #উচ্চবিত্ত
তা হল #স্বপ্ন_দেখা।
খুব উচ্চবিলাসী স্বপ্ন দেখি,সেই অধিকার খোদাপ্রদত্ত,তাই ইচ্ছেমত দেখি।
৬.
অনেক কিছুই লিখার ছিল,
গুছিয়ে লিখতে পারিনা,তাই সাহসও হয়না লিখার,(বলতে গেলে এসব লিখাটাও দুঃসাহসিকতার নামান্তর)
ভাল থাকুক মধ্যবিত্ত মানুষগুলো,
একদিন বৃত্তের বাইরে বেরিয়ে স্বপ্ন পূরণের মধ্য দিয়ে উচ্চবিত্ত শ্রেণীতে পা রাখবে,এটায় আশা,
তবে আগে মানুষ হওয়াটা জরুরী,
#ভাল_মানুষ

(#বিঃদ্রঃ- উপরোক্ত লিখা/গল্পটা লেখকের একান্ত ব্যাক্তিগত জীবনের)।

মন্তব্যসমূহ